ঢাকা | বঙ্গাব্দ

ইসরায়েলের স্বপ্নভঙ্গ : বাংলাদেশ দিল শেষ সিদ্ধান্ত

  • নিউজ প্রকাশের তারিখ : Apr 16, 2025 ইং
অন্তর্বর্তী সরকার আবারও বাংলাদেশের পাসপোর্টে ‘ইসরায়েল বাদে সব দেশে বৈধ’ বাক্যটি ফিরিয়ে এনেছে। ছবি : সংগৃহীত ছবির ক্যাপশন: অন্তর্বর্তী সরকার আবারও বাংলাদেশের পাসপোর্টে ‘ইসরায়েল বাদে সব দেশে বৈধ’ বাক্যটি ফিরিয়ে এনেছে। ছবি : সংগৃহীত
ad728

ইসরায়েল এক সময় বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের আশায় বুক বেঁধেছিল। ২০২১ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের সময় পাসপোর্ট থেকে ‘ইসরায়েল বাদে সব দেশে বৈধ’ এই বাক্যটি বাদ দেওয়া হয়।

তখন বিষয়টিকে অনেকেই একটি সম্ভাব্য নীতিগত পরিবর্তনের ইঙ্গিত হিসেবে দেখলেও, বাস্তবে বাংলাদেশ কখনোই ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়ার দিকে এগোয়নি।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) ইসরায়েলের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম জেরুজালেম পোস্ট এক প্রতিবেদনে জানায়, বাংলাদেশ সরকারের সর্বশেষ সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে ইসরায়েলের সেই আশার চূড়ান্ত পরিসমাপ্তি ঘটেছে।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, অন্তর্বর্তী সরকার আবারও বাংলাদেশের পাসপোর্টে ‘ইসরায়েল বাদে সব দেশে বৈধ’ বাক্যটি ফিরিয়ে এনেছে। এর ফলে স্পষ্ট হলো, বাংলাদেশে ইসরায়েলিদের প্রবেশ এখন আরও কঠোরভাবে নিষিদ্ধ এবং বাংলাদেশ সরকার এখনো ইসরায়েল রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোর বিরোধী।

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের সিদ্ধান্তের সময় বাংলাদেশের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছিলেন, কেউ বাংলাদেশ থেকে ইসরায়েলে ভ্রমণ করতে পারবে না। যদি কেউ করে, তাহলে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, পাসপোর্ট হলো শুধুমাত্র একটি পরিচয়পত্র। এটি কোনো দেশের পররাষ্ট্রনীতির প্রতিফলন নয়। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি একই আছে, যেমনটা শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলে ছিল। আমরা ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেই না।

তা সত্ত্বেও, ইসরায়েল বিষয়টিকে ‘পজিটিভ সিগন্যাল’ হিসেবে দেখেছিল। ওই সময় গিলাড কোহেন, যিনি তখন ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের উপ-মহাপরিচালক ছিলেন এবং বর্তমানে জাপানে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করছেন।

তিনি বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়ে টুইট করেছিলেন (বর্তমানে এক্স)। সেখানে তিনি লেখেন: অসাধারণ সংবাদ। বাংলাদেশ ইসরায়েলে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। এটি একটি স্বাগত পদক্ষেপ এবং আমি বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি সামনের দিকে এগিয়ে যান এবং ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করুন। যেন আমাদের উভয়ের জনগণ সুবিধা পায় এবং উন্নতি করে।

জেরুজালেম পোস্ট-এর সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের পাসপোর্টে বিতর্কিত সেই বাক্যটি ফেরত আসায় এখন আর কোনো ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। সংবাদমাধ্যমটি তাদের প্রতিবেদনের শিরোনামে উল্লেখ করেছে : কূটনৈতিক সম্পর্কের আশা—যা এক অর্থে ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষার ইতি ঘটার ইঙ্গিতই বহন করে।

এদিকে বাংলাদেশ সরকার এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে আবারও স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, ইসরায়েল বিষয়ে বাংলাদেশ তার নীতিতে অটল রয়েছে—যেখানে ফিলিস্তিনি জনগণের ন্যায্য অধিকারকে সমর্থন করা হয় এবং ইসরায়েল রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি না দেওয়ার অবস্থান আজও বহাল আছে।


নিউজটি আপডেট করেছেন : জার্নাল ডেস্ক

কমেন্ট বক্স