রংপুরের গঙ্গাচড়ায় ভিজি এফ'র চাল আত্মসাৎ এর অভিযোগ ইউপি সদস্য ঝর্ণার বিরুদ্ধে।
-
নিউজ প্রকাশের তারিখ :
Apr 11, 2025 ইং
ছবির ক্যাপশন:
রিয়াজুল হক সাগর, রংপুর।
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার গজঘণ্টা ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যের উমর গ্রামে বছরের পর বছর ধরে অনিয়ম ও দুর্নীতি বেরেই চলেছে। ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ঝর্ণা বেগমের বিরুদ্ধে উঠেছে ভিজিএফ চাল, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চাল, বয়স্ক ও বিধবা ভাতা টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়দেরা জানান ঝর্না বেগম ইউপি সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে অসহায় ও দরিদ্র জনগণের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করে নিজের খেয়াল খুশিমতো দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলেই তিনি তাদেরকে ভয়ভীতি, হুমকি এবং সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
সম্প্রতি উমর গ্রামের বাসিন্দা প্রতিবন্ধী নাজমুল ইসলাম স্থানীয়দের স্বাক্ষর নিয়ে গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে জানা যায় পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বরাদ্দকৃত ভিজিএফ চাল বিতরণের তালিকায় নাম থাকলেও অনেকেই চাল না দিয়ে নিজেই আত্মসাৎ করেছেন।
নাজমুল ইসলাম বলেন, “আমার নাম তালিকায় আছে কিন্তু আমাকে তাল দেওয়া হয়নি। খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, আমার নামে চাল উঠেছে, অথচ আমি কোনো স্লিপই হাতে পাইনি। ইদের আগে ১০ কেজি চাল পেলে ৩ দিন নিশ্চিন্তে খেতে পারতাম, কিন্তু সেটাও আমার রিবারের কপালে জোটেনি।
একই অভিযোগ করেছেন শাহাজুল ইসলাম, ছাবেরা বেগম, মমতাজ বেগমসহ অনেকেই। কেউ কেউ জানান, চাল তুলতে গেলে বলা হয় ‘স্লিপ নাই’, আবার কারও চাল অন্য কেউ তুলে নিয়েছে—এমন অজুহাতও দেওয়া হয়।
সরেজমিন অনুসন্ধানে আরও উঠে আসে ঘুষ বাণিজ্যের চিত্র। অভিযোগ রয়েছে, বয়স্ক বেধবা ভাতা ও ৪০ দিনের কর্মসূচির কাজে অন্তর্ভুক্ত হলে দিতে হয় ঘুষ।
বিধবা রওশনারা বেগম অভিযোগ করেন, ৪০ দিনের কাজের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার কাছ থেকে ৪ হাজার টাকা এবং বিধবা ভাতা পাইয়ে দেওয়ার নামে আরও ১ হাজার টাকা নিয়েছেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত ৪০ দিনের কর্মসূচির কাজ বা ভাতা কিছুই তিনি পাননি।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য ঝর্ণা বেগমের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে প্রথমে সাংবাদিক পরিচয় শুনে ফোন কেটে দেন তিনি। পরবর্তীতে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি। সরাসরি তার বাড়িতে গেলে তিনি বলেন, এরকম কিছু সমস্যা হয়েছে ম্যানেজ করেছি আপনারা এ বিষয়ে কোন নিউজ করেন না। আমার স্বামী অসুস্থ আমার ছেলে অসুস্থ, আমার সম্মান নষ্ট করেন না।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদ হাসান মৃধা বলেন, “লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করার জন্য উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সজিবুল করিমকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, এছাড়াও ইউপি সদস্য ঝর্ণা বেগমের বিরুদ্ধে অতীতেও একই ধরনের অভিযোগ রয়েছে।
২০২২ সালের ৯ নভেম্বর নাজরিন বেগম তার খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির রেশন কার্ডের চাল আত্মসাতের অভিযোগ করেন।
২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর মোসলেমা বেগম অভিযোগ করেন, তার বয়স্ক ও বিধবা ভাতার টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
উভয় অভিযোগই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে লিখিতভাবে জমা দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ ওঠে, পরে ইউপি চেয়ারম্যানের সহায়তায় অভিযোগকারীদের ভয়ভীতি ও মামলার ভয় দেখিয়ে অভিযোগ তুলে নিতে বাধ্য করা হয়।
নিউজটি আপডেট করেছেন : জার্নাল ডেস্ক
কমেন্ট বক্স