ঢাকা | বঙ্গাব্দ

বিশ্বকে চমকে দিতে প্রস্তুত ইরানের এআই অস্ত্রভাণ্ডার

  • নিউজ প্রকাশের তারিখ : Apr 20, 2025 ইং
প্রতীকী ছবি ছবির ক্যাপশন: প্রতীকী ছবি
ad728

ইরানের সেনাবাহিনী এমন কিছু অত্যাধুনিক ও ভয়ংকর অস্ত্র ধারণ করে, যেগুলোর অনেকটাই গোপন, এমনকি কিছু ‘অতিগোপন’ শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত। এইসব অস্ত্র কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি দ্বারা পরিচালিত এবং যুদ্ধক্ষেত্রে এগুলোর ক্ষমতা ‘ব্যতিক্রমী’ বলে দাবি করেছেন দেশটির স্থলবাহিনীর প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কিয়োমারস হেইদারি।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) স্থানীয় সময় ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল আল আলমে হেইদারির দেওয়া প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকার থেকে এ তথ্য জানা যায়। খবর মেহের নিউজ।

সাক্ষাৎকারে হেইদারি জানান, আমাদের হাতে এমন অস্ত্র রয়েছে যেগুলো কৌশলগত কারণে এখনো প্রকাশ করা হয়নি, তবে সেগুলো সম্পূর্ণভাবে সক্রিয় এবং যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত। হেইদারি বলেন, যদিও এগুলো প্রচলিত অস্ত্র হিসেবেই শ্রেণিবদ্ধ, তবুও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংযুক্তির ফলে এসব অস্ত্র অসাধারণ সামরিক সক্ষমতা অর্জন করেছে।

তিনি আরও বলেন, ইরান-ইরাক যুদ্ধের (১৯৮০-৮৮) পর থেকে ইরানের স্থলবাহিনী একটি আমূল রূপান্তরের মধ্য দিয়ে গেছে। প্রথাগত কাঠামো ভেঙে বর্তমানে এটি এক আধুনিক, গতিশীল ও উচ্চমার্গের অভিযানে সক্ষম বাহিনীতে পরিণত হয়েছে।

হেইদারি জানান, বর্তমানে ইরানের স্থলবাহিনী যে কোনো সময়ে দ্রুত মোতায়েন হতে পারে, উচ্চমাত্রার আক্রমণ পরিচালনা করতে পারে এবং তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপে সক্ষম। দেশজুড়ে নজরদারি এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনী সবচেয়ে উন্নত গোয়েন্দা প্রযুক্তি ও অস্ত্রব্যবস্থা ব্যবহার করছে।

তিনি বলেন, আমরা দেশের বিভিন্ন সীমান্তে ১০টি সামরিক ডিভিশন মোতায়েন করেছি। এসব ইউনিট কৌশলগত অবস্থানে থেকে সীমান্ত নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা নজরদারিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তবে এর মানে এই নয় যে সব ধরনের হুমকি শেষ হয়ে গেছে—বরং এটি স্থায়ী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একটি প্রতিরোধমূলক উপস্থিতি।

গত পারস্য বর্ষপঞ্জির শেষ তিন মাসে ইরান সেনাবাহিনী দেশের পূর্বাঞ্চল, পশ্চিমাঞ্চল এবং উপকূলীয় এলাকায় ৩টি বৃহৎ সামরিক মহড়া চালিয়েছে বলে জানান হেইদারি। এই মহড়াগুলো বাহিনীর প্রস্তুতি, সমন্বয় এবং কৌশলগত সক্ষমতা যাচাইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

তিনি বলেন, আমাদের চোখ সবসময় খোলা, আর আঙুল ট্রিগারে—যেকোনো হুমকি দেখা দিলে শত্রুকে বাঁচার সুযোগ দেওয়া হবে না।

আধুনিক যুদ্ধের সবচেয়ে বিপজ্জনক এক দিক হচ্ছে সাইবার হামলা। এই হুমকি মোকাবিলায় ইরান সেনাবাহিনী আলাদা সাইবার ইউনিট গঠন করেছে। হেইদারি জানান, আমাদের সাইবার ইউনিটগুলো এখন সর্বোচ্চ প্রযুক্তিগত সক্ষমতায় কাজ করছে এবং তারা প্রতিপক্ষের যে কোনো ডিজিটাল হুমকি প্রতিহত করতে প্রস্তুত।

ইরানের স্থলবাহিনী এবং ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি)-এর মধ্যে রয়েছে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়। স্থল, সমুদ্র এবং আকাশপথ—সবখানেই এই দুই বাহিনী পারস্পরিক সহযোগিতায় কাজ করছে। এই সংহত শক্তি ইরানের সামরিক সক্ষমতাকে বহু গুণে বাড়িয়ে দিয়েছে।

সম্প্রতি ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান ইরানের সেনাবাহিনীর প্রশংসা করে বলেন, ইরানের সেনাবাহিনী একটি শক্তিশালী ও দৃঢ় কাঠামোর বাহিনী, যা অন্যান্য দেশের জন্য অনুকরণীয় মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি আরও বলেন, সেনাবাহিনীর দৃঢ়তা ও দক্ষতার কারণেই ইরান এখন পশ্চিম এশিয়ায় একটি অবিসংবাদিত শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।


    নিউজটি আপডেট করেছেন : জার্নাল ডেস্ক

    কমেন্ট বক্স