মিষ্টি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ তুলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেছেন, আমি নিজেও বহু মিষ্টির দোকান থেকে মিষ্টি কিনেছি। কোনো দোকানদার ভ্যাটের চালান দেননি। তারা ভ্যাট আদায়ের যন্ত্র ইএফডিও ব্যবহার করেন না।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে রাজস্ব বোর্ড ভবনে অনুষ্ঠিত এনবিআরের প্রাক-বাজেট আলোচনায় এসব অভিযোগ করেন তিনি।
মিষ্টির ওপর ভ্যাট কমানোর প্রস্তাব দিয়ে বাংলাদেশ সুইটস ম্যানুফ্যাকচারার অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব শ্রী ননী গোপাল ঘোষ বলেন, মিষ্টির ওপর যখন সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট ছিল তখন অনেক বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে।
জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেন, আপনি বলছেন ফ্রি করে দিলে রাজস্ব বাড়বে। এটা একটা আজগুবি কথা। আপনি ১৫ শতাংশের ওপর অঙ্ক করে দেখলেন রাজস্ব আদায় কম, সাড়ে ৭ শতাংশ বেশি হয় এ রকম জাদুকরী দেশে বাস করলে তো হবে না।
তিনি আরও বলেন, আমি নিজেও বহু মিষ্টির দোকান থেকে মিষ্টি কিনেছি। কোনো দোকানদার ভ্যাটের রিসিট দেন না। ইএফডিও ব্যবহার করে না। এটা সমস্যা আছে। ভ্যাট দেয় জনগণ। আমি এ জীবনে যত মিষ্টি কিনেছি সব জায়গায় ভ্যাট দিয়েছি, কিন্তু আমার ভ্যাট সরকারের কোষাগারে আসে নাই। আমার তো বয়স হয়েছে। এ পর্যন্ত দেখলাম না কোনো মিষ্টি দোকানদার আমাকে ভ্যাটের রিসিট দিয়েছে।
মিষ্টিতে সুপারশপের মতো ভ্যাট ইনক্লুসিভ করার পরিকল্পনার কথা জানিয়ে চেয়ারম্যান বলেন, আমরা মিষ্টির দামে ভ্যাট অন্তর্ভুক্ত করব। ইনক্লুসিভ করব। ভ্যাট আলাদা করে ধরা হবে না। ক্রেতা ভ্যাট দেখে চমকে উঠবে না। এমন একটা আদেশ প্রস্তুত করছি। টোটাল ভ্যালুর ওপর ভ্যাট ধরব। ক্রেতার জানার দরকার নাই যে তিনি কত টাকা ভ্যাট দিয়েছেন। এই একই জিনিস আমরা সুপারশপে করেছি।
যাত্রীদের ট্রাভেল ট্যাক্সের বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমানে যাত্রীদের ট্রাভেল ট্যাক্স এয়ারলাইন কোম্পানিগুলো তাদের টিকিটের মূল্যের সঙ্গে যোগ করে নিয়ে নেয়। এ ট্রাভেল ট্যাক্সের টাকা সরকারের টাকা কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই এ টাকা সরকার পায় না। অনেক ক্ষেত্রেই এয়ারলাইন কোম্পানিগুলো সরকারি কোষাগারে এটা জমা দেয় না বা কখনো কখনো কোম্পানি দেউলিয়া হয়ে যায়, তারা ব্যবসা বন্ধ করে চলে যান। সরকারের কোটি কোটি টাকা পাওনা থাকলে সেটা দেয় না।
তিনি আরও বলেন, আমরা চাচ্ছি যাত্রীদের ট্রাভেল ট্যাক্স যাত্রী নিজে দেবে। তারা টাকা জমা দিয়ে চালান দেবে এবং সেটা দেখিয়ে চলে যাবে।
আবদুর রহমান খান বলেন, আমাদের এবারের বাজেটের মূল টার্গেট হচ্ছে আমরা ট্রেন্ডকে ফ্যাসিলেটেড করব। লুফহোলগুলো বন্ধ করব আর বৈষম্য যত পারি কমাব।